< ঘি এর উপকারিতা ( Benefits Of Ghee ) ঘি খাওয়ার নিয়ম এবং খাঁটি ঘি এর দাম -
মিষ্টি

ঘি এর উপকারিতা ( Benefits Of Ghee ) ঘি খাওয়ার নিয়ম এবং খাঁটি ঘি এর দাম

ঘি হলো এক ধরনের দুগ্ধ জাতীয় খাবার। আমাদের দেহে পুষ্টি সরবরাহে ঘি এর উপকারিতা অনেক বেশি।ঘি খাওয়ার ফলে আমাদের কর্মশক্তি বাড়ে। অনেকে রান্নার ক্ষেত্রে ঘি ব্যবহার করেন। আমাদের মধ্যে অনেক মানুষ ঘি খেতে অনেক ভালোবাসেন। আমার কেউ কেউ ঘি একদম পছন্দ করেনা। তবে এটা আমাদের মানতে হবে যে ঘি অনেক উপকারী একটি খাবার। যা আমাদের দেহের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ করে।

ঘি নির্দিষ্ট পরিমান খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত পরিমান ঘি খেলে উপকার না হয়ে ক্ষতি হতে পারে। আবার স্বাভাবিক সুস্থতার জন্য আমাদের প্রতিদিন পরিমান মতো ঘি খাওয়া প্রয়োজন। কেননা অতিরিক্ত ঘি খেলো শরীরের খারাপ কেলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। আমাদের দেশে ঘি এর বর্তমান মূল্য প্রতি ১ কেজি ঘি ১৬০০ টাকা।

যে সকল সমস্যা থাকলে ঘি খাওয়া উচিত না।

  • অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা।
  • উচ্চ রক্তচাপ।
  • ডায়াবেটিস।
  • হার্টের সমস্যা ইত্যাদি থাকলে ঘি খাওয়া যাবেনা।

ঘি এর পুষ্টিগুণ

পুষ্টিগুণে ভরপুর এই খাবারের কথা লিখে শেষ করা যাবে না। কেননা ঘি মানব দেহকে অনেক রোগ থেকে বাচিয়ে রাখে। ঘি এর উপকারিতা অনেক। তবে সারা দিনে ১০ থেকে ১৫ গ্রাম ঘি খাওয়া যাবে৷ এর বেশি খেলে শরীরের জন্য ক্ষতি হবে। ঘি এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ই, ভিটামিন কে যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক অপকারী উপাদান।

আরো পড়ুনঃ  কিভাবে রান্না করবেন সেরা ডিম সেমাই রেসিপি

ঘি এমন এক খাবার উপাদান যা সহজে নষ্ট হয়না। ঘি ১০০ বছর পর্যন্ত ভালো থাকে। এবং এর গুনাগুন ঠিক থাকে। গরুর দুধের ঘি এর উপকারিতা সম্পর্কে জানা দরকার। কেননা এটি সবচেয়ে উপকারী একটি উপাদান। ঘি আমাদের হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ ঘি তে রয়েছে বিউটারিক এসিড। যা আমাদের খাবার কে খুব তারাতারি হজম করতে সাহায্য করে। ঘি তে রয়েছে প্রচুর পরিমানে চর্বি যা আমাদের ওজন বাড়িয়ে দেয়।

আমাদের দেহে ঘি এর উপকারিতা – Benefits Of Ghee

ঘি আমাদের ত্বক ভালো রাখে।

ত্বকের জন্য ঘি অনেক উপকারী খাবার। ঘি আমাদের ত্বক ভালো রাখতে ও দেহের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই আমাদের ত্বক সুস্থ রাখার জন্য ঘি খাওয়া দরকার। এছাড়াও ঘি আমাদের দেহের এলার্জি বা চুলকানিজনিত সমস্যা সমাধান করে।

ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করে।

বর্তমান সময়ের খুব মারাক্তক একটা রোগ হলো ক্যান্সার। আর ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঘি খাওয়া যেতে পারে। কারণ ঘি তে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্ট। যা আমাদের শরীরের ফ্রি রেডিও লজিক্যাল ক্ষতি করার ক্ষমতাকে কমিয়ে আমাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে।

কোষ্টকাঠিন্য রোগ প্রতিরোধ করে।

আমাদের যাদের কোষ্টকাঠিন্য বা পেটের সমস্যা আছে তাদের নিয়মিত ঘি খাওয়া দরকার। কারণ এতে রয়েছে এক ধরনের ন্যাচরাল লুব্রিকেটিং। যা কোষ্টকাঠিন্য রোগ দূর করে।

মানসিক চাপ কমায়।

ঘি খুব ভালো একটি খাবার। ঘি এর অসাধারণ উপকারিতার মধ্যে একটি হলো ঘি মানসিক চাপ কমায়। যাদের মেজাজ খিটখিটে তারা ঘি খাবেন তাহলে মেজাজ ঠান্ডা থাকবে। কারণ খাবার ভালো ভাবে হজম না হওয়ার জন্য মানুষের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। ঘি শরীর ও মন দুটোই ঠান্ডা রাখে। ঘি মাথা ব্যথা কমায়।

আরো পড়ুনঃ  এক নজরে জেনে নিন কিভাবে তৈরি করবেন মজাদার পায়েস

চুল পড়া প্রতিরোধ করে।

চুলের যত্নে ঘি ব্যবহার করা হয়। চুলের যত্নে ঘি অনেক ভালো কাজ করে। যাদের চুল পড়া রোগ আছে তাদের ঘি খাওয়া উচিত। তাহলে অনেকটাই উপকার পাওয়া সম্ভব। ঘি খাওয়ার ফলে চুলের গুঁড়া শক্ত হয়। তাই চুল পড়া রোধ করার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ঘি খেতে পারেন।

ঘি কর্মদক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।

সারা দিন কাজ করার ফলে অনেক সময় আমরা ক্লান্তি অনুভব করি। ঘি সব ক্লান্তি দূর করে কর্মদক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে। ঘি এর মধ্যে আছে ভিটামিন এ,ডি, ই এবং ভিটামিন কে। এসব উপাদান আমাদের কর্ম দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ঘি খাওয়ার নিয়ম

পুষ্টিকর এই খাবার খাওয়ার কিছু নিয়ম রয়েছে। সব থেকে ভালো উপকার পাওয়ার জন্য প্রতিদিন সকালে খালি পেতে ঘি খাওয়া দরকার। সকালে এক গ্লাস পানিতে এক চামচ ঘি মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এতে চুল পরাসহ আরো অনেক রোগ থেকে মুক্তি মিলে। সকালে ঘি খাওয়ার পর ৩০ মিনিটের মধ্যে কোনো খাবার খাবেন না। খালি পেতে ঘি খাওয়ার ফলে দেহের কোষের কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়।

ঘি বানানোর কার্যকরী পদ্ধতি

দুধ থেকে ঘি খুব সহজেই তৈরি করা যায়। তবে যেসব উপকরন লাগে তা হলো,

  • প্রথমে ভালো মানের দুধ সংগ্রহ করতে হবে।
  • দুধ সিলবারের পাত্রে ভালো করে ফুটাতে হবে। এমন ভাবে ফুটাতে হবে যেন এতে কোন জীবাণু না থাকে। এবং সর পরার আগ পর্যন্ত ফুটাতে হবে।
  • দুধকে ঠান্ডা বা শীতল তাপমাত্রায় রাখতে হবে। এবং একে খাঁটি দই এ পরিনত করতে হবে। যার জন্য দুধের মধ্যে লেবুর রস মেশানো যেতে পারে।
  • তার পর দুধের মধ্যে দই ভালো ভাবে মিশিয়ে অন্ধকার জায়গায় ৮ ঘন্টার বেশি সময় রাখতে হবে।
  • দই থেকে মাখন আলাদা করতে হবে। এবং মাখন শীতল স্থানে রাখতে হবে।
  • মাখনের মধ্যে অনেক সময় পানি থাকে। তাই মাখনকে ভালো করে জাল দিতে হবে।
  • এর পর ঝাল দিয়ে সিদ্ধ করার এক পর্যায়ে দেখা যাবে যে মাখন পরিষ্কার হয়ে গেছে। এবং পাত্রের তল দেশে কিছু তলানি পরেছে তখন বুঝতে হবে ঘি তৈরি প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর তখন ঘি এর গন্ধ পাওয়া যাবে।
  • তার পর ঘি এর পাত্রটি নামিয়ে ভালো একটি পরিষ্কার পাত্রে ঘি ছেকে নিতে হবে।
  • পরিষ্কার পাত্রে ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে ঘি সংরক্ষণ করতে হবে।
  • এভাবে ঘি তৈরি করে আমরা অনেক বছর সংরক্ষণ করতে পারি।
ঘি এর উপকারিতা

আমাদের শেষ কথা।

ঘি হলো এমন এক খাবার যা শরীরের অভ্যন্তরীন আদ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ঘি খাওয়ার ফলে আপনি ভিতর থেকে সতেজতা অনুভব করবেন। গরমের সময় ঘি খেলো শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকবে এবং জলের অভাব দূর করে। ঘি শরীর কে ভিতর থেকে নরম করে। এবং শরীরের আদ্রতা ঠিক রাখে। ঘি খেলে ওজম বাড়েনা শুধু বরং সুষম খাবারের পাশাপাশি ঘি খেলে দেহের ওজন কমে। তাই প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে ঘি খাওয়া উচিত।

আরো পড়ুনঃ  কিভাবে রান্না করবেন সেরা ডিম সেমাই রেসিপি

যাদের এলার্জি আছে তারা ঘি খেতে ভয় পায়৷ তবে বুঝতে হবে ঘি দুধ থেকে তৈরি হলেও ঘি এর মাঝে এলার্জি এর কোন প্রভাব নেই। বরং ঘি খেলে এলার্জি ভালো হয় এছাড়া যাদের হার্টের সমস্যা তারা যদি প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে এক চামচ ঘি খায় তবে তাদের হার্টের সমস্যা দূর হবে।

আরও পড়ুন আমলকির উপকারিতা, অপকারিতা এবং ব্রেস্ট বড় করার উপায়, খাবার ও নিয়মাবলী

You cannot copy content of this page

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker