< খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা - সঠিক তথ্যের ঘর
ফলের উপকারিতা

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা

খেজুর

যার আরবি নাম তুমুর। বাংলা ভাষায় তার নাম খেজুর। খেজুর হলো মরুভূমির একটি ফল। এটা মূলত মরুভূমির দেশেই বেশি পাওয়া যায়। আজকে আমরা আলোচনা করবো খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে। এই ফলের রয়েছে অনেক উপকারিতা এবং ঔষধি গুন। তাই বলা যায় খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অপরিসীম।

অনেকেই খেজুরকে প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বলে থাকে। খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন এবং আশ। মানুষের দেহের প্রয়োজনীয় আয়রনে ১১ শতাংশ খেজুর পুরন করতে পারে। তাই আমাদের খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে হবে। একটি প্রাপ্ত বয়স্ক খেজুর গাছে থেকে প্রতি বছর ৮০ থেকে ১২০ কিলোগ্রাম খেজুর পাওয়া যায়।

আরো পড়ুনঃ  আপেলের উপকারিতা ( ৭ টি উপকারিতা জানা থাকা দরকার )

খেজুরের প্রকারভেদ

আরব দেশ বা সৌদি আরবে বিভিন্ন রকমের খেজুর পাওয়া যায়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আজুয়া, আনবারা, সাগি, সাফাওয়ি,মুসকানি, খালাস, ওয়াসালি, বেরহি, শালাবি, ডেইরি, মাবরুম, ওয়ান্নাহ, সেফরি, সুক্কারি, খুদির ইত্যাদি। এসব খেজুরের দাম আকার এবং মানভেদে প্রতি কেজি ১০-১৫০ রিয়েল পর্যন্ত হয়ে থাকে।

খেজুরের পুষ্টিগুন

খেজুর আমাদের বেশ পরিচিত একটি ফল। এটা ফ্রুকটোজ এবং গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ। খেজুর রক্তের শর্করা বাড়ায়। খেজুরকে চিনির বিকল্প হিসাবেও ব্যাবহার করা যায়। প্রতি ৩০ গ্রাম খেজুরে ৯০ ক্যালোরি, ১ গ্রাম প্রোটিন ১৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং আরো অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। খেজুরে রয়েছে ভিটামিন বি। যা মস্তিষ্ক ভালো রাখতে সাহায্য করে। আয়রনে ভরপুর এই খেজুর আমাদের অনেক উপকার করে। প্রতিদিন মাত্র ২ টি খেজুর আপনাকে অনেক রোগের হাত থেকে মুক্তি দিবে।

খেজুরের ৭টি উপকারিতা ও অপকারিতা সহ খেজুরের ঔষধি গুণ

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

খেজুরের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট। এই এন্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এছাড়াও রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফাইবার, ভিটামিন এবং আশ। খেজুরের এসব উপাদান দেহের বিভিন্ন কার্যাবলি সম্পুর্ন করে। তাই আমাদের প্রতিদিন খেজুর খাওয়া দরকার।

২. রক্তস্বল্পতা দুর করে।

যাদের রক্তস্বল্পতা রয়েছে তাদের জন্য খেজুর গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। আমাদের শরিরকে সুস্থ রাখতে আয়রন দরকার। এই আয়রন খেজুর থেকে পাওয়া যায়। পুষ্টিবিদের মতে মানুষের দেহের প্রয়োজনীয় আয়রনের ১১ ভাগ খেজুর থেকে পাওয়া যায়। তাই আমাদের দেহে খেজুরের ভুমিকা অপরিসীম।

আরো পড়ুনঃ  মেথির উপকারিতা ও মেথির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সঠিক তথ্য

৩. খেজুর রয়েছে ফাইবার

আমাদের দেহের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান ফাইবার। আর খেজুর হলো এই ফাইবারের একটি উৎস। খেজুর খাওয়ার মাধ্যমে এই ফাইবারের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।

৪. খেজুর উচ্চ রক্তচাপ কমায়।

খেজুরে রয়েছে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম। খেজুরে থাকা ম্যাগনেশিয়াম আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম।

৫. কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে।

যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হাওয়ার মতো সমস্যা রয়েছে। তারা প্রতিদিন খেজুর খেতে পারেন। প্রতিদিন রাতে একটি পাত্রে খেজুর ভিজিয়ে রাখুন। তার পর সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে খেজুর ভিজিয়ে রাখা পানি পান করুন। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দুর হবে।

খেজুরের উপকারিতা ও অপকারিতা

৬. হৃৎস্পন্দনের হার ঠিক রাখে।

খেজুর হৃৎস্পন্দনের হার ঠিক রাখে। মানব দেহের একটি জটিল অঙ্গের নাম হলো হৃদপিণ্ড। খেজুর এই হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের হার ঠিক রাখে।

৭. রেটিনার স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

খেজুরে থাকা লিউটেন এবং জিক্সাথিন রেটিনার স্বাস্থ্য ভালো রাখে। খেজুরের অন্য উপাদানগুলো দেহের আরো বিভিন্ন কাজ সম্পুর্ন করে থাকে।

 আরও পড়ুনঃ  এক নজরে জেনে নিন কিভাবে তৈরি করবেন মজাদার পায়েস

আরো পড়ুনঃ  গাজরের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং গাজরের পুষ্টিগুণ

খেজুরের অপকারিতা

আমরা জানি যে খেজুরের অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু উপকারী ফল অনেক সময় ক্ষতিও নিয়ে আসতে পারে। তাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার। আমাদের মধ্যে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা খেজুর খাওয়ার আগে ডক্টরের পরামর্শ নিন। আবার যাদের শরীরে পটাশিয়ামের পরিমান বেশি তারা খেজুর খাওয়ার বেপারে সতর্ক থাকবেন।

আমাদের শেষ কথা

পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফল খেতে কে না ভালোবাসে। ছোট বড় আমরা সবাই খেজুর কেটে ভালোবাসি। তাই আমাদের উচিত এই ফলের পুষ্টিগুণ এবং অপকারিতা সম্পর্কে জানা। তাই আমরা উপরে খেজুরের পুষ্টিগুণ এবং অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। আপনি আপনার আশেপাশে যেকোনো বাজারে এই ফলটি কিনতে পারবেন। অবশই পুষ্টিকর এই ফলটি কিনার সময় সতর্কতা অবলম্বন করবেন।

You cannot copy content of this page

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker