< ওজন কমানোর খাবার ( এই ১০টি খাবার সম্পর্কে জানা দরকার) - সঠিক তথ্যের ঘর
শারীরিক স্বাস্থ্য

ওজন কমানোর খাবার ( এই ১০টি খাবার সম্পর্কে জানা দরকার)

ওজন কমানোর সহজ উপায়

বর্তমান সময়ের প্রায় অধিকাংশ মানুষের একটি সমস্যা। সেটি হল শরীরের ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হলে খাবারের দিকে নজর দিতে হবে। ওজন কমানোর খাবার খেতে হবে। না খেয়ে বা কম খেয়ে নয়। ওজন কমাতে হবে নিয়ম মেনে। তবে হ্যাঁ আগের থেকে কিছু কম ত খেতেই হবে। আজকে আমরা ওজন কমানোর খাবার নিয়ে কথা বলব। ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গেলে শরীরের ভিবিন্ন সমস্যার সম্ভবনা থাকে। তাই আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রন করা উচিৎ । ওজন বেড়ে গেলে শরীরে রক্তে চর্বি বেড়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদি হতে পারে।

ওজন কেন বেড়ে যায়

অনেক কারনে আপনার ওজন বেড়ে জেতে পারে। এর মধ্যে কিছু যেমন, খাবার বেশি খাওয়া, ঘুমানোর অনিয়ম, তেলে ভাঁজা খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম না করা ইত্যাদি। বেশির ভাগ সময় ওজন বেড়ে যাওয়ার কারন হল। খাবার এর উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে বেশি খেয়ে ফেলা। তাই খাবার খাওয়া নিয়ন্ত্রন করতে হবে। সঠিকভাবে ব্যায়াম না করলেও ওজন তারাতারি বেড়ে যায়। প্রতিদিনের কাজ যেমন সঠিক সময়ে না ঘুমাতে যাওয়া, সঠিক সময়ে খাবার না খাওয়া ইত্যাদি এসব কারনে ওজন বেড়ে যায়।

ওজন কমানোর খাবার তালিকা

ওজন কমানোর খাবার গুলোর একটি চার্ট। নিয়ন্ত্রিত খাবার ছাড়া ওজন কমানো সম্ভন নয়। ওজন কমানো ৭০% খবরের উপর এবং ৩০% ব্যায়ামের নির্ভর করে। তাই শরীরের পুষ্টির পরিমান ঠিক রেখে এই চার্ট তৈরী করা হয়েছে।

সকালের খাবারদুপুরের খাবারবিকালের খাবাররাতের খাবার
লেবু পানিভাতকলামুড়ি
সবুজ আপেল সবজিলেবু পানিসবজি
ছোলাসবুজ শাকছোলাসালাদ
ওটমিলমাছখেজুর বা কিসমিসডাল
মধুমাংসফলমূলপাতলা রুটি
কিসমিস অথবা খেজুরডালচা
দুধকফি
ডিম ফলের রস বা জুস

কিভাবে ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখবেন

ওজন কমানোর সব থেকে ভালো উপায় হল ডায়েট করা। ডায়েটের মধ্যে ওজন কমে এমন খাবার রাখা। এবং খাবারে যেন শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং নিউট্রিশনের ব্যালেন্স ঠিক থাকে। ওজন কমানোর জন্য আপনাকে নিয়মিত ডায়েট মেনে চলতে হবে। আপনি ওজন কমানোর সঠিক নিয়মের মাধ্যমেই ওজন কমাতে পারবেন। আপনার খাবার তালিকা থেকে চিনি ও শ্বেতসার বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেইট বাদ দিতে হবে। নিয়ম মানতে পারলে ওজন কমানো তেমন কঠিন ব্যাপার না।

আরো পড়ুনঃ  মোটা হওয়ার ট্যাবলেট এর নাম | মোটা হওয়ার ভিটামিন ক্যাপসুল

আরো পড়ুন

ওজন কমানোর জন্য সেরা ১০ টি খাবার।

১. প্রচুর পরিমানে পানি পান করা।

ওজন কমাতে যে পানি কত উপকারি। এটা আমরা সবাই জানি না। প্রতিদিন খাবার এর আগে ২ গ্লাস পানি পান করুন। এতে আপনার ওজন কমানোটা আরও অনেক সহজ হবে। নিয়মিত পানি পান করার মাধ্যমে অতিরিক্ত ফ্যাট কমানো সম্ভব। তাই নিয়মিত পানি পান করুন। পানি শুধু ওজন কমাবে না আপনার সম্পূর্ণ শরীরকে ভালো রাখবে।

ওজন কমানোর খাবার

২. জাম্বুরা 

আমরা জাম্বুরাকে শুধু একটি ফল হিসাবেই চিনি। খুব কম মানুষেরা জানি জাম্বুরার খাওয়ার উপকারিতা। আপনি জানেন নিয়মিত জাম্বুরার জুস খেলেও আপনার ওজন কমবে। কেননা জাম্বরাতে রয়েছে ফাইটোকেমিকল্স্ ইনসুলিন (Phytochemicals Insulin)। এই উপাদানটি আপনার শরীরের ক্যালোরিকে চর্বিতে রপান্তরিত না করে এনার্জিতে রুপান্তরিত করবে। তাহলে ওজন কমানোর জন্য আপনি জাম্বুরা খেতেই পারেন।

অন্য পোস্ট: আপেলের উপকারিতা ( ৭ টি উপকারিতা জানা থাকা দরকার )

৩. শাক সবজি 

ওজন কমানোর জন্য শাক সবজিও অনেক অনেক ভালো। আপনি প্রতিদিন খাবারে তাজা শাক সবজি রাখুন। এটা আপনার ওজন কমানোর কষ্ট অনেক কমিয়ে দিবে। ওজন বেড়ে যায় এমন খাবার এর পরিবর্তে শাক সবজি খাবেন। এতে আপনার ওজন কমবে আর শরীর প্রয়োজনীয় উপাদান পাবে।

আরো পড়ুনঃ  টাফনিল এর কাজ কি? টাফনিল খাওয়ার নিয়ম/ টাফনিল এর দাম কত/tufnil 200mg

৪. তাজা ফলমূল 

বেশি পরিমানে তাজা ফলমূল খাওয়া। এটাও হতে পারে আপনার একটি উপায়। তাই প্রতিদিন ভালো তাজা ফলমূল খাবেন। এতে আপনার শরীর প্রয়োজনীয় উপাদান পাবে এবং ওজন কমবে।

আরো পড়ুন: এক নজরে দেখে নিন কলার উপকারিতা ও অপকারিতা

৫. গ্রীন টি 

ওজন কমানোর আর একটি সহায়ক উপাদান হল গ্রীন টি। আপনি নিয়মিত গ্রীন টি খেলে আপনার ওজন কমবে। তাই ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত গ্রীন টি খাবেন। গ্রীন টি তে রয়েছে ক্যাটেচিন (catechin) নামক এক প্রকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানটি আপনার ফ্যাট কমাতে সাহায্য করবে। গ্রীন টি খাওয়ার মধ্যমে বছরে ৭ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো যায়।

৬. ডিম 

ওজন কমানোর জন্য ডিম একটি উপকারী খাবার। প্রতিদিন সকালে একটি করে ডিম খাবেন। কারন ডিমে রয়েছে প্রোটিন যা আপনার পেটকে ভরা রাখবে। আপনার খুদা কমিয়ে দিবে।

৭. পেস্তা বাদাম 

ওজন কমাতে পেস্তা বাদাম অনেক ভূমিকা পালন করে। তাই আপনার খাবার লিস্টে পেস্তা বাদাম রাখুন। পেস্তা বাদামে রয়েছে হেলদী ফ্যাট, প্রোটিন এবং ডায়েটারি ফাইবার (Dietary fiber)। এই উপাদানগুলো আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। পেস্তা বাদামে থাক ফ্যাট শরীরে কোনো ক্ষতি করবে না। এই ফ্যাট আপনার ব্রেন এবং হার্টকে ভালো রাখবে।

৮. মাশরুম 

মাশরুম সবার প্রিয় এবং খুব পুষ্টিকর একটি খাবার। তাই প্রতিদিন খেতে পারেন। এটা আপনার চর্বি কাটতে সাহায্য করবে। অন্য সব প্রোটিন জাতীয় খাবার এর পরিবর্তে মাশরুম খান। আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদান যোগাবে। প্রতি ১ কাপ মাশরুমে ৪৪ ক্যালোরি থাকে।

ওজন কমানোর খাবার

৯. খাবারে অলিভ অয়েল থাকতে হবে।

আপনি প্রতিদিনের খাবার তালিকায় অলিভ অয়েল রাখতে পারেন। ওজন কমানোর জন্য এটা খুব উপকারী একটা পর্দাথ। অলিভ অয়েল আপনার অতিরিক্ত ফেটে কমিয়ে দিবে। এই তেলে মনস্যাচুরেটেড ফ্যাট (monounsaturated fat) থাকে। যেটা ক্যালোরি বার্ণ করতে উপকারী।

আরো পড়ুনঃ  ওজন কমানোর সহজ উপায় (গুরুত্বপুর্ণ ১৬ টি টিপস আপনার জানা দরকার)

১০. ব্রোকলি 

ব্রোকলি অন্য সব সবজির মতোই একটি সবজি। এটা আপনার ওজন বাড়ার জন্য দায়ী পদার্থকে প্রতিহত করবে। তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকাতে ব্রোকলি রাখতে পারেন। ব্রোকলিতে রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেলস ইত্যাদি। এটা আপনার খুদা কমিয়ে দিবে। আপনাকে কম খেতে সাহায্য করবে।

ওজন কমানোর খাবার খাওয়ার নিয়ম

আমরা এখানে সব রকমের খাবার সম্পর্কে বলেছি। আমাদের মনে রাখতে হবে ডায়েড করার সময় পুষ্টিকর খাবার বেশি খেতে হবে। কারণ আমাদের শরীর নিয়ন্ত্রিত হয় খাবারের মাধ্যমে। আমাদের দেহে সব ধরণের ভিটামিনের দরকার আছে। তাই খাদ্য নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পুষ্টির দিকেও নজর দিতে হবে।

সবজি ছাড়া অন্য সব খাবার গুলো কম কম খাওয়াই ভালো। সারা দিনে লেবুর পানি দুইবার খাবেন। সকালে কিছু পরিমান খেজুর আর ১০/১২ টা কিসমিস খাবেন। রাতে শুয়ার আগে গ্রীন অ্যাপেল খাবেন। সবজি বেশি পরিমানে খাওয়া যায়। কিন্তু প্রতিদিন কলা খেতে পারবেন না। কলার পরিবর্তে অন্য খাবার খাবেন যেটা চার্ট এ আছে। আসল কথা হলো যে খাবার নিয়ন্ত্রণে রেখে আপনার শরীরকে পরিপূর্ণ পুষ্টি দিতে হবে।

প্রচুর পানি খেতে হবে। খাবার দিয়ে পেট ভরা রাখা যাবে না। সব সময় আপনার খুদা অনুভব করতে হবে। খাবার এর পরিবর্তে পানি দিয়ে পেট ভরে রাখুন। উপরের চার্ট এর সব গুলো খাবার একদিনে খাওয়া যাবে না। প্রতিদিন খাবার পরিবর্তন করে করে খেতে হবে। মনে রাখবেন ওজন কমানো আর অপুষ্টিতে ভুগা এক কথা নয়।

আপনাকে প্রতিদিন নিয়মিত ৬ থেকে ৭ ঘন্টা ঘুমাতে হবে। রাতে খাবার খবর ৩ ঘণ্টা পরে ঘুমাবেন। উপরের চার্ট বা তালিকার খাবার খাবার খাওয়ার সাথে সাথে আপনাকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম ওজন কমানোর জন্য খুবই উপকারী।

অন্য পোস্ট: সেরা চাইনিজ ভেজিটেবল রেসিপি

আমাদের শেষ কথা।

সুস্থ জীবন যাপনের জন্য আপনাকে অবশ্যয় ওজন কমাতে হবে। ওজন কমানোর জন্য আপনি খাওার আগে ১ গ্লাস পানি পান করুন। মেধ বা ওজন কমানো খুব কঠিন কোন কাজ নয়। আপনি একটু কষ্ট করে চেষ্টা করলেই ওজন কমাতে পারবেন। নিয়মিত খাওয়া দাওয়া এবং ঘুমাতে হবে। অতিরিক্ত ঘুমানো যাবে না। প্রতি দিন হাঁটাহাঁটি করতে হবে আলস জীবন যাপন করা থেকে বিরত থাকুন।

You cannot copy content of this page

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker