< ব্যায়ামের উপকারিতা ( শরীর চর্চার ১০ টি উপকারিতা ) - সঠিক তথ্যের ঘর
শারীরিক স্বাস্থ্য

ব্যায়ামের উপকারিতা ( শরীর চর্চার ১০ টি উপকারিতা )

ব্যায়াম হলো যেকোনো শারীরিক কার্যক্রম যা আামাদের শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য ব্যায়াম করা জরুরি।  ব্যায়ামের কারনে আমাদের দেহের অঙ্গ পতঙ্গ সঠিকভাবে বিকশিত হয়। আমাদের সবার ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে জানা দরকার। কেননা, ব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে জানলে আমাদের ব্যায়াম করার প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

ব্যায়াম আমাদের দেরের বিভিন্ন ধরনের উপকার করে থাকে।  ব্যায়ামের কারনে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ব্যায়াম আমাদের শারীরিক বৃদ্ধি ঘটায়। তাই আমাদের জীবনে ব্যায়ামের ভুমিকা অপরিসীম। প্রতিটি মানুষের উচিত শারীরিক অবস্থা ভালো রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা।

ব্যায়ামের প্রকারভেদ

সাধারণত আমরা বলতে পারি যে শারীরিক পরিশ্রমকে ব্যায়াম বলা যেতে পারে। কারন মানেই হলো সামান্য পরিশ্রম করা। এই পরিশ্রমের কারনে আমাদের দেহে একধরনের শান্তি আসে। এই সামান্য পরিশ্রমের ফলে আমাদের শরিরে এবং মনে এক ধরনের ভালো লাগা কাজ করে। আমরা ব্যায়াকে সাধারণত তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি। এগুলো হলো

১. সাধারন ব্যায়াম

সাধারণ ব্যায়াম বলতে আমরা বুঝে থাকি। যে ব্যায়ামের কোনো রকমের সাজ সরঞ্জামের দরকার হয় না এমন ব্যায়ামকে। সাধারণ ব্যায়ামের মধ্যে হতে পারে পুশ আপ করা, বাসার ছাদে হাটাহাটি করা, দৌড়াদৌড়ি করা, এবং লাফালাফি করা ইত্যাদি।  কঠিন ব্যায়াম বা যোগাসন করার আগে সাধারন ব্যায়ামগুলো করতে হয়। কারন, কঠিন ব্যায়ামগুলো করার আগে আমাদের শরীর গরম করার দরকার হয়। সাধারন ব্যায়াম করা ছাড়া কঠিন ব্যায়াম করা ঠিক না।

আরো পড়ুনঃ  কৃমি ঔষধ খাওয়ার নিয়ম | কৃমি ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম।

২. যোগাসন বা যোগ ব্যায়াম করা।

ব্যায়ামের উপকারিতা

নির্দিষ্ট একটি নিয়ম মেনে এই ব্যায়ামটি করতে হয়। মানসিক এবং শারীরিক  শান্তি লাভের জন্য যোগ ব্যায়ামের ভুমিকা অপরিসীম। প্রাচিনকাল থেকেই একটি সুনির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে এই ব্যায়াম করা হয়ে থাকে। এই ব্যায়াম মানসিক শান্তি লাভের জন্য খুবই কার্যকর। মানসিক শান্তির পাশাপাশি এই ব্যায়ামের মাধ্যমে শারিরীক সুস্থতাও বজায় রাখা যায়। সকালে ২০-৩০ মিনিট যোগাসন করলে সারা দিন মন ভালো থাকে। সারা দিন ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করার জন্য এই যোগাসনের অনেক ভুমিকা রয়েছে।

৩. যান্ত্রিক ব্যায়াম।

বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে যে ব্যায়াম করা হয়ে থাকে তাকে যান্ত্রিক ব্যায়াম বলে। যান্ত্রিক ব্যায়ামের ফলে আমাদের দেহের পেশীর উন্নতি ঘটে। যান্ত্রিক ব্যায়াম করার জন্য আমাদের প্রথেম সাধারন ব্যায়াম করতে হয়। সাধারন ব্যায়াম করে শরীর গরম হলে যান্ত্রিক ব্যায়াম বা কঠিন ব্যায়ামগুলো করতে হয়। যেহেতু এই ব্যায়ামগুলো একটু কঠিন তাই শরীর গরম না করে এই ব্যায়াম করলে বিভিন্নরকম সমস্যা হতে পারে।

কখন ব্যায়াম করা ভালো।

ব্যায়াম করার নির্দিষ্ট একটি সময় রয়েছে।  সময় নির্ধারিত না করে ব্যায়াম করলে সুফলের থেকে কুফল বেশি পাওয়া যাবে। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমান সময় ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম করার সময় মাঝে মাঝে পরিমাণ মতো পানি পান করতে হবে।সব থেকে বেশি ভালো হয় যদি সকাল বেলা ব্যায়াম করা যায়।  কিন্তু যদি কেউ সকালে ব্যায়াম করতে না। পারেন তাহলে বিকেল করতে পারেন। যারা বেকার বাসাতেই তাকেন তারা দিনের যেকোনো সময় ব্যায়ম করতে পারেন। তবে রাতে ঘুমানের আগে কেউ ব্যায়াম করবেন না।এতে উকারের চেয়ে অপকারটাই বেশি হতে পারে।

আরো পড়ুনঃ  নিশাত ট্যাবলেট | হামদর্দ নিশাত ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম ও কাজ কি

নিয়মিত শারীরিক ব্যায়ামের উপকারিতা

১. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে

যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছি তাদের জন্য ব্যায়াম খুব উপকারী। ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনি আপনার অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারেন। নিয়মিত ব্যায়াম করে ওজন কমিয়ে আপনার শারীরিক সুন্দর্য বাড়াতে পারেন। সঠিক নিয়মে প্রতিদিন ব্যায়াম করতে পারলে ওজন নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কারন ওজন কমানোর কার্যকর উপায়ই হলো ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম।

২. শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করা।

ব্যায়াম এমনই একটা উপকারি জিনিস যা আপনার শরীরকে ফিট রাখবে। ব্যায়াম দেহের অতিরিক্ত চর্বিকে দেহ থেকে অপসারন করে দেয়। প্রতিদিন ব্যায়াম করলে কোনোভাবেই আপনার ওজন অতিরিক্ত বাড়তে পারবে না। শরীরকে রোগ জীবাণু থেকে দুরে রাখতে ব্যায়াম অপরিহার্য।

৩. পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম হয়।

শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করার ফলে ঘুম ভালো হয়। ব্যায়াম করলে শরীরে ক্লান্তি আসে। শরীরে ক্লান্তি আসলে তারাতারি ঘুম আসে এবং ভালো ঘুম হয়। তাই ভালো ঘুমের জন্য আমাদের ব্যায়াম করা দরকার।

ব্যায়ামের উপকারিতা

৪. ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

ডায়াবেটিস এখন একটি মারাত্মক রোগ হিসাবে পরিচিত।  ডায়াবেটিস থেকে মুক্ত থাকার জন্য ব্যায়াম করার দরকার। ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।  ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পেতে আমাদের কমপক্ষে ২০-৩০ হাটাহাটি করা দরকার।

৫. রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।

ব্যায়াম আমাদের দেহের রক্ত চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যায়ামের ফলে আমাদের দেহের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস এর মতো রোগ দুরে থাকে ব্যায়াম করলে।

আরো পড়ুনঃ  ওজন কমানোর খাবার ( এই ১০টি খাবার সম্পর্কে জানা দরকার)

৬. মন ভালো থাকে।

মানসিক শান্তিলাভের আরেকটি উপায় হলো নিয়মিত ব্যায়াম করা। সকালে ২০-৩০ মিনিট ব্যায়াম করার ফলে সারা দিন কজে মন বসে। তাই বলা যায় আমাদের মানসিক শান্তির জন্য ব্যায়াম অপরিহার্য।

৭. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের দেরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব।  প্রতিদিন ব্যায়াম করার ফলে আমাদের দেহে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায়। যার ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ব্যায়ামের ফলে শরীরের পুরনো সব রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৮. হাড় বৃদ্ধি করে এবং শক্তিশালী করে।

শরীরের হাড়ের গঠন বৃদ্ধি এবং মজবুত হয় ব্যায়ামের ফলে। ব্যায়ামের কারনে হাড়ের প্রোয়োজনীয় উপাদান ভালোভাবে কাজ করতে পারে। যার ফলে হাড়ের বৃদ্ধি ঘটে এবং মজবুত হয়।

৯. অক্সিজেন সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়।

আমরা যখন দৌড়াই তখন আমাদের শরীরে রক্ত দ্রুত চলাচল কর। দ্রুত রক্ত চলাচলের কারনে রক্তের অক্সিজেন সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। এবং আমাদের দেহের ভারসাম্য ঠিক থাকে।

১০. স্বরন শক্তি বৃদ্ধি পায়।

ব্যায়ামের উপকারিতা

ব্যায়ামের ফলে মানসিক অবস্থা ভালো থাকে। মস্তিষ্কের কোষগুলো সতেজ হয়। মস্তিষ্কে ভালোভাবে রক্ত প্রবাহিত হওয়ার কারনে স্বরন শক্তির উন্নতি ঘটে। মস্তিষ্কের সুস্থতায় ব্যায়াম অপরিহার্য।

আমাদের শেষ কথা।

হৃৎপিণ্ডের সুস্থতার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। প্রতিদিন বা নিয়মিত ব্যায়াম করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যায়ামের জন্য সময় বের করা দরকার। না হলে শরীর পুরোপুরি ভালো রাখা যাই না।তাই একবার ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলা দরকার। প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করা প্রয়োজন। যদি কঠিন বা ভারী ব্যায়াম করা যায় তাহলে অবশ্য সপ্তাহে ৭৫ মিনিটই যথেষ্ট।

You cannot copy content of this page

Adblock Detected

Please consider supporting us by disabling your ad blocker